আর্নেস্তো চে গেভারা
১৯২৮ সালের ১৪ জুন রোসারিওতে জন্ম নিয়েছিলেন কিউবার বিপ্লবের অন্যতম নায়ক কমরেড চে।
রোসারিওতে শৈশব কাটানোর পরে পরিবারের সাথে কর্দোভা শহরে চলে গিয়েছিলেন বিপ্লবী জীবনে ‘চে’ হিসাবে খ্যাত হওয়া আর্নেস্তো গেভারা। ১৯৪৮ সালে বুয়েন্স আয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসা শাস্ত্র অধ্যয়ন শুরু করেন তিনি। ১৯৫১ সালে ছাত্রাবস্থাতেই বন্ধু আলবার্তো গ্রানাদোকে সাথে নিয়ে মোটর সাইকেল-যোগে পুরো দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশ ভ্রমণ শুরু করেন। ফিরে এসে মেডিক্যাল ডিগ্রি শেষ করে ১৯৫৩ সালের সাত জুলাইতে আবারও মহাদেশ ভ্রমণে বেরিয়ে পড়েন চে। গুয়াতেমালাতে বামপন্থী সরকারের সাথে কিছু দিন কাটান তিনি। এ-সময় আর্নেস্তো গেভারা নামের সাথে ‘চে’ শব্দটি যুক্ত হয়। সহকর্মীদের সাথে কথাবার্তায় ‘ওহে’ বা ‘বন্ধু’ আহ্বানের সমতূল্য স্প্যানিশ শব্দটি সব সময় ব্যবহার করার কারণে তাঁর নামের সাথে ‘চে’ শব্দটি যুক্ত হয়। কিছু দিন পরে জ্যাকৌবো আরবেন্স গুসমানের সরকারের ব্যর্থতায় ক্ষুব্ধ চে ১৯৫৪ সালের সেপ্টেম্বরে মেক্সিকো সিটিতে উপস্থিত হয়ে আগের বছরে সম্পর্ক স্থাপিত হওয়া প্রবাসী কিউবান বিপ্লবী দলের সাথে যোগ দেন। ১৯৫৯ সালের ৮ জানুয়ারি বিপ্লবীদের সাথে বিজয়ীর বেশে কিউবার রাজধানী হাভানাতে প্রবেশ করেন চে। ফেব্রুয়ারি মাসে কৃতজ্ঞতার স্মারক-স্বরূপ চে’কে ‘জন্মসূত্রে নাগরিক’-এর মর্যাদা দান করে কিউবা।
বিপ্লবী সরকারের প্রশাসনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা অব্যাহত রাখা সত্ত্বেও, ১৯৬৫ সালের মার্চ মাসের শেষ দিকে কোনও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা ছাড়াই কিউবা ত্যাগ করেন চে। পরে জানা যায় যে, কিউবা ছেড়ে বিপ্লবে সহযোগিতার জন্য আফ্রিকার কঙ্গোতে হাজির হয়েছিলেন চে। সেখান থেকে তিনি বলিভিয়াতে যান বিপ্লব বাস্তবায়নের লক্ষ্যে। ১৯৬৭ সালের ৯ অক্টোবর বলিভিয়ার লা হিগুয়েরাতে সিআইএ-এর লোকদের হাতে প্রাণ হারান এই বিপ্লবী। মারিও তিরান নামের বলিভীয় সেনাবাহিনীর এক জন সার্জেন্ট উপরতলার নির্দেশক্রমে বন্দি চে গেভারার উপরে গুলি চালান। গুলি করার পূর্ব মুহূর্তে সেনারা জানতে চায় চে নিজের অমরত্বের কথা ভাবছেন কিনা। উত্তরে চে বলেন, ‘না, আমি বিপ্লবের অমরত্বের কথা ভাবছি।’
সংগ্রহীত