জীববিজ্ঞানের ধারণা
আমরা সবাই জানি, যাদের জীবন আছে তারা জীব আর যাদের জীবন নাই তারা জড়। পদাথবিজ্ঞান জীবনের মূলভিত্তি হিসেবে কাজ করে আর রসায়ন সেই একই নিয়ম যা জড় জগতকে নিয়ন্ত্রণ করে। জীববিজ্ঞান প্রাচীন বিজ্ঞান। গ্রিক দার্শনিক এরিস্টটল হলেন জীববিজ্ঞানের জনক । জীববিজ্ঞানকে Biology বলা হয়। Bios ( জীবন) ও logos ( জ্ঞান) এই গ্রিক শব্দ দুটি সংযোগের মাধ্যমে গঠিত হয়।
চিকিৎসা ও কৃষিক্ষেত্রে এদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা আছে । সভ্যতার আদিকাল থেকে গ্রিস, মিশর, ভারতবর্ষ ও চীনসহ বিভিন্ন অঞ্চলের জীব বিজ্ঞানের কিছু না কিছু চর্চা করা হয়েছে তবে সেসব চর্চাকে আধুনিক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির বিচারে ঠিক বিজ্ঞান বলা যায় না তবুও জ্ঞানের এই শাখার বিকাশের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
জীববিজ্ঞানের শাখা
জীববিজ্ঞানকে দুইটি শাখাতে ভাগ করা যায় যথা – উদ্ভিদবিজ্ঞান, প্রাণিবিজ্ঞান। জীবের কোন দিক আলোচনা করা হয়েছে তার উপর ভিত্তি করে জীববিজ্ঞানকে আবার দুইটি ভাগে ভাগ করা যায় -ভৌত জীববিজ্ঞান, ফলিত জীববিজ্ঞান।
ভৌত জীববিজ্ঞান
১। অঙ্গসংস্থান (Morphology) : এখানে জীবের সার্বিক অঙ্গসংস্থানিক বা দৈহিক গঠন বর্ণনা করা হয় দেশের বাইরের বর্ণনার বিষয়কে বহিরঙ্গ সংস্থান এবং দেহের ভিতরের বর্ণনার অন্ত অঙ্গসংস্থান বলা হয়
২। শ্রেণিবিন্যাসবিদ্যা বা ট্যাক্সোনমি (Taxonomy) : এখানে জীবের শ্রেণীবিন্যাস ও তার রীতিনীতি গুলো আলোচনা করা হয়
৩। শরীর বিদ্যা (Physiology) : জীবদেহের নানা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের জৈব-রাসায়নিক ,কার্যক্রম যেমন সরণ সালোকসংশ্লেষণ ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
৪। হিস্টলজি (Histology) : জীব দেহের টিস্যুসমূহকে গঠন বিন্যাস এর সম্পর্কে আলোচনা করা হয়.
৫। ভ্রূণবিদ্যা (Embroyology ) : জনন কোষের উৎপত্তি জনন কোষের উৎপত্তি নিষিক্ত জাইগোট থেকে ভ্রূনের সৃষ্টি ,গঠন বিকাশ ,প্রভৃতির নিয়ে শাখায় আলোচনা করা হয়েছে।
৬। কোষবিদ্যা (Cytology) : জীবদেহের গঠন কার্যাবলী ও বিভাজন সম্পর্কে আলোচনা করা হয়
৭। বংশগতিবিদ্যা বা জেনেটিক্স (Genetics) :জিন ও জীবের বংশগতি ধারা সম্পর্কে এর শাখায় আলোচনা করা হয়
৮। বিবর্তন বিদ্যা (Evolution) : পৃথিবীতে প্রাণের বিকাশ ও জীবের বিবর্তন এবং ক্রমবিকাশের তথ্যসমূহের আলোচনা করা হয় ।
৯। বাস্তুবিদ্যা (Ecology ) : শাখায় প্রাকৃতিক পরিবেশের সাথে জীবের আন্তঃসম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করা হয়।
১০।এন্ডোক্রাইনোলজি (Endrocrinology) : জীবদেহে আলোচনা করা হয় এর শাখায়
১১। জীবভূগোল (Biogeography) : পৃথিবীর বিভিন্ন ভৌগোলিক সীমারেখা জীবের বিস্তৃতি ও অভিযোজন সম্পর্কে আলোচনা করা হয়।

ফলিত জীববিজ্ঞানঃ
জীবন সংশ্লিষ্ট প্রায়োগিক বিষয়গুলো এ শাখায় আলোচনা করা হয় নিম্নে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য শাখার কথা উল্লেখ করা হলো –
১। জীবাশ্মবিজ্ঞান (Palaeontology ) প্রাগৈতিহাসিক জীব এর বিবরণ এবং জীবাশ্ম সম্পর্কিত বিজ্ঞান সম্পর্কে আলোচনা করা হয়
২। জীবপরিসংখ্যানবিদ্যা ( Biostatistics ) জীবপরিসংখ্যান বিষয়ক বিজ্ঞান সম্পর্কে আলোচনা করা হয়.
৩।পরজীববিদ্যা (Parasitology): পরজীবিতা পরজীবী জীবের জীবন প্রণালী এবং রোগ সম্পর্কে আলোচনা করা হয় এই শাখায়
৪। মৎস্যবিজ্ঞান (Fisheries): মাছ মাছ উৎপাদন মৎস্য সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণ সম্পর্কে আলোচনা করা হয়.
৫। কীটতত্ত্ব( Entomology) : উপকারিতা-অপকারিতা ইত্যাদি সম্পর্কিত বিজ্ঞান
৬। অণুজীববিজ্ঞান (Microbiology) :ভাইরাস ব্যাকটেরিয়া আণুবীক্ষণিক ছত্রাক এবং অন্যান্য অনুজীব সম্পর্কিত বিজ্ঞান.
৭। কৃষিবিজ্ঞান (Agriculture) : কৃষি বিষয়ক বিজ্ঞান
৮। চিকিৎসা বিজ্ঞান ( Medical Science ): মানবদেহে রোগ চিকিৎসা ইত্যাদি সম্পর্কিত বিজ্ঞান
৯।জিন প্রযুক্তি (Genetic ):প্রযুক্তি ও এর ব্যবহার সম্পর্কিত বিজ্ঞান.
১০। প্রাণরসায়ন ( Biochemistry): জীবের প্রাণরাসায়নিক কার্যপ্রণালী রোগ ইত্যাদি সম্পর্কিত বিজ্ঞান
১১। জিন প্রযুক্তি ( Genetic Engineering ) :প্রযুক্তি ও এর ব্যবহার সম্পর্কিত বিজ্ঞান.
১২।পরিবেশ বিজ্ঞান ( Environmental Science): পরিবেশ সম্পর্কিত বিজ্ঞান.
১৩। সামুদ্রিক জীববিজ্ঞান (Oceanography): সামুদ্রিক জীব সম্পর্কিত বিজ্ঞান
১৪। বনবিজ্ঞান (Forestry): বন বন সম্পদ ব্যবস্থাপনা, এবং সংরক্ষণ সম্পর্কিত বিজ্ঞান.
১৫ । ফার্মেসি (Pharmacy): ওষুধ শিল্প ও প্রযুক্তি বিষয়ক বিজ্ঞান
১৬। জীবপ্রযুক্তি (Biotechnology): মানব এবং পরিবেশের কল্যাণের জীব ব্যবহারের প্রযুক্তি সম্পর্কিত বিজ্ঞান
১৭। বন্যপ্রাণীবিদ্যা ( Wildlife ) :বন্যপ্রাণী বিষয়ক বিজ্ঞান।
১৮। বায়োইনফরমেটিক্স (Bioinformation ): কম্পিউটার, প্রযুক্তি নির্ভর জীব বিজ্ঞান ভিত্তিক তথ্য যেমন ক্যান্সার বিশ্লেষণ বিষয়ক বিজ্ঞান
শ্রেণীবিন্যাস
এখন পর্যন্ত উদ্ভিদের প্রায় ৪ লক্ষ এবং প্রাণের প্রায় ১৩ লক্ষ প্রজাতির নামকরণ ও বর্ণনা করা আছে ।এর সংখ্যা চূড়ান্ত নয় কেননা প্রায় প্রতিদিনই আরো নতুন নতুন প্রজাতির বর্ণনা সংযুক্ত করা হচ্ছে অনুমান করা যায।ভবিষ্যতে সব জীবের বর্ণনা শেষ হলে এর সংখ্যা দাঁড়াবে প্রায় এক কোটিতে ।এজন্য এদের জানা-বোঝা এবং শেখার সুবিধার জন্য এই অসংখ্য জীবকে সুষ্ঠুভাবে বিন্যাস করা বা সাজানোর প্রয়োজন হয় জীবজগৎ কে স্বাভাবিক নিয়মে শ্রেণীবিন্যাস করার জন্য প্রয়োজনীয়তা অবশ্য অনেক আগে থেকে প্রকৃতিবিজ্ঞান অনুভব করেছিলেন তাদের এই প্রয়োজনের তাগিদেই জীব বিজ্ঞানের একটি স্বতন্ত্র শাখা গড়ে উঠেছিল যার নাম দেয়া হয়েছিল ট্যাক্সোনমি বা শ্রেণিবিন্যাসবিদ্যা শ্রেণীবিন্যাসের লক্ষ্য একটাই তারা এই বিশাল এবং বৈচিত্র্যময় জীবজগতকে সহজে অল্প পরিশ্রমে অল্প সময়ে সঠিকভাবে জানা সুইডিশ প্রকৃতিবিদ ক্যারোলাস লিনিয়াস শ্রেণিবিন্যাসের উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন ১৭৪৫ সালে আঠার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চিকিৎসাশাস্ত্রে ডিগ্রি লাভের পর তিনি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন। বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিদ বিশেষ করে ফুল সংগ্রহ করা আর জীবের শ্রেণীবিন্যাসের তার অনেক আগ্রহ ছিলও ।তিনি প্রথম জীবনের জীবের শ্রেণীবিন্যাসের এবং নামকরণ এর উপর ভিত্তি প্রবর্তন করেন এবং অসংখ্য নমুনা জীবের বৈশিষ্ট্য পর্যবেক্ষণ করে জীবজগৎ কে দুই ভাগে ভাগ করে যেমন উদ্ভিদ ও প্রাণী জগৎ।
শ্রেণিবিন্যাসের উদ্দেশ্য : শ্রেণীবিন্যাসের উদ্দেশ্য হলো জীবের দল ও উপদল সম্পর্কে জ্ঞান করা আহরণ করা । জীবজগৎ কে ভিন্নতার দিকে আলোকপাত করে আহরিত জ্ঞানকে সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা এবং পূর্ণাঙ্গ জ্ঞানকে সংক্ষিপ্ত ভাবে উপস্থাপন করা যা প্রতিটি জীবকে শনাক্ত করে তার নামকরণ এর ব্যবস্থা করা।জীবজগৎ ও মানব কল্যাণে প্রয়োজনীয় জীবগুলোকে শনাক্ত করে তাদের সংরক্ষণের সচেতন হওয়া।
জীবজগৎ
ক্যারোলাস লিনিয়াস এর সময়কাল থেকে শুরু করে বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত জীবজগতকে উদ্ভিদ ও প্রাণী জগৎ হিসেবে বিবেচনা করে দুটি রাজ্যের শ্রেণীবিন্যাস করা হয়। বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রায় বর্তমানে কোষের ডিএনএ এবং আরএনএ এর প্রকারভেদ জীব দেহের কোষের বৈশিষ্ট্য সংখ্যা এবং খাদ্যাভাসের তত্ত্বের উপর তথ্য উৎপাত এর ওপর ভিত্তি করে (R.H.Whittaker) 1969 সালে জীবজগতকে পাঁচটি রাজ্য করার প্রস্তাব দেন ।পরবর্তীকালে মারগুলিস ১৯৭৪ সালের হুইটেকার শ্রেণীবিন্যাসের পরিবর্তিত রূপ দেন তিনি সমস্ত জীব জগতকে দুটি সুপার কিংডমে ভাগ করেন এবং রাজ্যকে এই দুটি সুপার কিংডমে অন্তর্ভুক্ত করেন।

সুপার কিংডম 1
প্রোক্যারিওটা (Prokaryotae) :
১।এরা আদিকোষ বিশিষ্ট এককোষী
২। নিউক্লিয়াস সুগঠিত না।
৩। আণুবীক্ষণিক জীব।
রাজ্য 1 মনেরা (Monera)
বৈশিষ্ট্য:
১।এরা এককোষী ফিলামেন্টাস, কলোনিয়াল।
২। কোষের ক্রোমাটিন বস্তু থাকে কিন্তু নিউক্লিওলাস ও নিউক্লিয়ার পর্দা থাকে না ।
৩।এদের কষে প্লাস্টিক মাইট্রোকন্ডিয়া এন্ডোপ্লাজমিক জালিকা ইত্যাদি নেই কিন্তু রাইবোজোম আছে ।
৪।কোষ বিভাজন বিভাজন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় এরা প্রধানত শোষণ পদ্ধতিতে খাদ্য গ্রহণ করে।
৫। এছাড়া কেউ কেউ ফটোসিনথেসিস বা সালোকসংশ্লেষণ পদ্ধতিতে খাদ্য প্রস্তুত করে ।
৬।উদাহরন – নীলাভ সবুজ শৈবাল, ব্যাকটেরিয়া।

চিত্র –(ক) ব্যাকটেরিয়া, (খ) Nostoc ( নীলাভ সবুজ শৈবাল )
সুপার কিংডম 2
ইউক্যারিওটা (Eukaryota)
১। এরা প্রকৃত কোষ বিশিষ্ট ,এককোষী ও বহুকোষী জীব ।
২।এদের নিউক্লিয়াস সুগঠিত ।
৩।এরা এককভাবে অথবা কলোনি আকারে দলবদ্ধভাবে বাস করে ।
রাজ্য-2 প্রোটিস্টা (Protista) :
বৈশিষ্ট্য-
১। এরা এককোষী ও বহুকোষী ,একক বা কলোনিয়াল দলবদ্ধভাবে বা ফিলামেন্টাস।
২। এরা সুগঠিত নিউক্লিয়াস বিসিস্ট।
৩। কোষের ক্রোমাটিন বস্তু নিউক্লিয়ার পর্দা দ্বারা আবৃত থাকে ।
৪।ক্রোমাটিন বস্তুতে DNA, RNA এবং প্রোটিন থাকে।
৫। কোষের সকল ধরনের অঙ্গাণু থাকে।
৬।খাদ্য গ্রহণ শোষণ গ্রহণ বা ফটোসিনথেটিক পদ্ধতিতে ঘটে মাইটোসিস কোষ বিভাজনের মাধ্যমে এদের অযৌন প্রজনন ঘটে এবং কনজুগেশন এর মাধ্যমে অর্থাৎ জৈবনিক ভাবে ভিন্ন কিন্তু গঠনগতভাবে এক এইরূপ দুটি গ্যামেটের মিলনের মাধ্যমে যৌন প্রজনন ঘটে কোন গঠিত হয় না।
৭। উদাহরণ -অ্যামিবা ,এককোষী ও বহুকোষী শৈবাল ।

চিত্র-(ক) অ্যামিবা,(খ)ডায়াটম (এককোষী শৈবাল)
রাজ্য 3 : ফানজাই (Fungi)
বৈশিষ্ট্য
১। অধিকাংশ স্থলজ মৃতজীবী বা পরজীবী ।
২।এককোষী অথবা মাইসেলিয়াম সুতার মত অংশ দিয়ে গঠিত।
৩। নিউক্লিয়াস সুগঠিত
৪। কোষ প্রাচীর কাইটিন বস্তু দিয়ে গঠিত।
৫। অনুপস্থিতি
৬।হ্যাপ্লয়েড স্পোর দিয়ে বংশ বৃদ্ধি ঘটে ।

চিত্র –(ক) Penicillium , (খ )মাশরুম
রাজ্য 4: প্লানটি (Plantae)
বৈশিষ্ট্য
১।প্রকৃত নিউক্লিয়াসযুক্ত সালোকসংশ্লেষণকারী উদ্ভিদ ।
২। দেহে উন্নত টিস্যুতন্ত্র আছে ।
৩। এদের ভ্রুণ সৃষ্টি হয় এবং তা থেকে ডিপ্লয়েড পর্যায় শুরু হয় ।
৪।এদের প্রধানত স্থলজ , তবে অনেক জলজ প্রজাতি আছে ।
৫।এরা সপুষ্পক উদ্ভিদ।

নিচে ছকের মাধ্যমে প্লান্টির বিভাগ গুলো দেখানো হলো:

রাজ্য 5: অ্যানিমেলিয়া (Animalia)
বৈশিষ্ট্য
১।নিউক্লিয়াস বিশিষ্ট ও বহুকোষী প্রাণী।
২। এদের কোষে কোন কোষ প্রাচীর ও কোষ গহ্বর নাই ।
৩। প্লাস্টিড না থাকায় এরা হেটারোট্রফিক যা পরভোজী এবং খাদ্য গলাধঃকরণ করে দেহের জটিল টিস্যুতন্ত্র বিদ্যমান ।
৪। প্রধানত যৌন প্রজননের মাধ্যমে বংশবৃদ্ধি করে পরিনিত ডিপ্লয়েড পুরুষ ও স্ত্রীর যৌনাঙ্গ থেকে হ্যাপ্লয়েড গ্যামেট উৎপন্ন হয় ।
৫। উদাহরণ – মেরুদন্ডী প্রাণী ও অমেরুদন্ডী প্রাণী.

চিত্র – রয়েল বেঙ্গল টাইগার
2004 সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের টমাস ক্যাল লিবিয়ার স্মিথ জীবজগতের প্রচেষ্টাকে প্রোটোজোয়া এবং ক্রোমিস্টা নামে দুই ভাগে ভাগ করেন এবং মহড়াকে ব্যাকটেরিয়ার রাজ্য হিসেবে পূর্ণ নামকরণ করেন এভাবে তিনি জীবজগতকে মোট কয়টি রাজ্যে ভাগ করেছেন।
শ্রেণিবিন্যাসের বিভিন্ন ধাপ
শ্রেণিবিন্যাসের প্রতিটি ধাপে তার আগের ধাপ এর বৈশিষ্ট্য গুলোর সাথে নতুন কিছু বৈশিষ্ট্য যোগ করা হয় যত উপরে তার অন্তর্ভুক্ত বৈশিষ্ট্য সংখ্যাতত্ত্ব কম হবে এবং অন্তর্ভুক্ত জীবের সংখ্যা বেশি হবে আবার নিচের ধাপ তার অন্তর্ভুক্ত বৈশিষ্ট্যের সংখ্যা তত বেশি হবে এবং অন্তর্ভুক্ত হবে একটি পর্যায়ে মূলত আন্তর্জাতিক আছে
রাজ্য (Kingdom)
পব (Phylum)
শ্রেণী (Class)
বর্গ (Order)
গোএ (Family)
গণ (Genus)
প্রজাতি (Species)।
রাজ্য কারণ এরা সুকেন্দ্রিক কোষ বিশিষ্ট বহুকোষী পরভোজী এবং জটিল টিস্যুতন্ত্র আছে পর্ব কারণ জীবনের কোনো এক পর্যায়ে নটোকর্ড থাকে শ্রেণি কারণ বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ায় এবং চুল আছে বর্গ কারণ আঁকড়ে ধরার উপযোগী হাত এবং অপেক্ষা দৃষ্টিশক্তি বেশি উন্নত গোত্র কারণ শিম্পাঞ্জি গরিলা বানর প্রভৃতির সাথে সাদৃশ্য আছে গণ কারণ দেহের অনুপাতে মস্তিষ্ক সবচেয়ে বড় এবং খাড়াভাবে দুই পায়ে হাঁটতে পারে প্রজাতি কারণ চওড়া এবং খাড়া কপাল খুলে রহাট গনের অন্য প্রজাতির তুলনায় পাতলা এবং বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে উন্নত.
দ্বিপদ নামকরণ পদ্ধতি :একটি জীবের বৈজ্ঞানিক নাম দুটি অংশের পদ নিয়ে গঠিত হয় প্রথম অংশটি তার বোনের নাম এবং দ্বিতীয় অংশটা প্রজাতির নাম যেমন গোল আলুর বৈজ্ঞানিক নাম এখানে কোন নাম এবং প্রজাতির নাম বুঝায় এরূপ দুটি পথ দিয়ে গঠিত নামকে দ্বিপদ নাম এবং নামকরণের প্রক্রিয়াকে দ্বিপদ নামকরণ পদ্ধতি বলে ১৭৫৭ সালে সুইডিশ বিজ্ঞানী ক্যারোলাস লিনিয়াস বইটি রচনা করেন এই বইটি উদ্ভিদ বিজ্ঞানের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের সূচনা করে কারণ এর প্রকাশনার মাধ্যমে তিনি দ্বিপদ নামকরণ পদ্ধতি প্রবর্তন করেন এবং কোন প্রজাতির সংজ্ঞা দেন তিনি প্রথম ওই গ্রন্থের শ্রেণী এবং এবং প্রজাতির ধাপগুলো ব্যবহার করেন লিনিয়াস এই পদ্ধতির নাম করন পদ্ধতি নিঃসন্দেহ একটি চমৎকার উদ্ভাবন।
কয়েকটি জীবের দ্বিপদ নাম-
ধান | Oryza sativa |
পাট | Corchorus capsularis |
আম | Mangifera indica |
কাঁঠাল | Artocarpus heterophyllus |
শাপলা | Nymphaea nouchali |
জবা | Hibiscus rosa-sinensis |
কলেরা জীবাণু | Vibrio cholerae |
ম্যালেরিয়া জীবাণু | Plasmodium vivax |
আরশোলা | Periplaneta americana |
মৌমাছি | Apis indica |
ইলিশ | Tenualosa ilisha |
দোয়েল | Copsychus saularis |
রয়েল বেঙ্গল টাইগার | Panthera tigris |
মানুষ | Homo sapiens |
লিখেছেন,
আফিয়া জাহিন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়