বইয়ের নাম – প্যারাডক্সিকাল সাজিদ
লেখক – আরিফ আজাদ
To buy this book, click.
সৃষ্টিকর্তা ও ধর্মে বিশ্বাস মানুষের সহজাত বিশ্বাস। বিশেষ করে আর অন্য কোন সময়ে হোক বা না হোক ; মানুষ বিপদে পড়লে সৃষ্টিকর্তাকে ঠিকই স্মরণ করে। সভ্যতার অগ্রগতির সাথে সাথে মানুষ জ্ঞান -বিজ্ঞান ও তথাকথিত আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত হতে গিয়ে তাদের নিজ নিজ ধর্মের ব্যাপারে জ্ঞান অর্জন করার সময় পায় না। এতে করে বর্তমান তরুণ প্রজন্ম ধর্ম সম্পর্কে খুবই কম জানে। এই কম জানা বা অল্প বিদ্যা ভয়ংকরী সমস্যার কারণে ধর্মের অপব্যাখ্যা শুনে অনেক তরুণই বিভ্রান্ত হচ্ছে। এতে করে তারা দিন দিন ধর্ম থেকে দুরে সরে যাচ্ছে এবং ধর্মের উপর থেকে বিশ্বাস হারিয়ে ফেলছে। কিন্তু এতেও কি তারা শান্তি পাচ্ছে? আমি ব্যক্তিগতভাবে এমন অনেককে চিনি যারা না পুরোপুরি নাস্তিক হতে পারছে ; না পুরোপুরি আস্তিক থাকতে পারছে। একটা দোটানায় পড়ে তাদের মন বরং ক্ষতবিক্ষত হচ্ছে। ঠিক এমন সময়ে যেন ত্রাতা হয়ে এলেন লেখক আরিফ আজাদ। লিখলেন চমৎকার একটি বই যার নাম ‘ প্যারাডক্সিকাল সাজিদ ‘। বিশ্বাস আর অবিশ্বাসের দোলাচালে বিক্ষিপ্ত মানব মনের কোণে জমে থাকা প্রশ্নের যৌক্তিক ব্যাখ্যাপূর্ণ উত্তরমালায় সাজানো এই বই। ইসলাম সম্পর্কে অনেক ভুল ধারণার এবং অবিশ্বাসীদের প্রশ্নের যৌক্তিক ও সুন্দর উত্তর দেয়া হয়েছে এই বইয়ে। ক্রমবর্ধমান নাস্তিকতা ট্রেন্ডের অসারতা প্রমাণের পাশাপাশি একজন সৃষ্টিকর্তা যে আছেন এবং তিনি ছাড়া সবই যে অস্তিত্বেহীন সেই জিনিসটি বইটিতে সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে। বইটির মুল চরিত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রো বায়োলজি ডিপার্টমেন্টে অধ্যয়নরত সাজিদ। সে একসময় যথেষ্ট ধার্মিক ছিলো কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু নাস্তিক বন্ধু ও বড়ভাইয়ের সংস্পর্শে ইসলাম ধর্ম থেকে বিশ্বাস হারিয়ে ফেলে। কিন্তু একদিন গল্পের লেখক তথা তাঁর বন্ধু ও রুমমেট আরিফের সাথে তর্ক-বিতর্কে তাঁর ভুল ভাঙে। সে আবারও ধর্মচর্চায় মমনোযোগী হয়। ধর্মচর্চায় মনোনিবেশের পর অনেক অবিশ্বাসী নাস্তিকদের প্রশ্ন ও চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়। সেইসব চ্যালেঞ্জের জবাব সাজিদ কিভাবে যৌক্তিকভাবে হাসিমুখে দেয় সেগুলোই মুলত গল্প আকারে এই বইতে এসেছে। এই বইয়ের সুন্দর একটি দিক হলো এই বইয়ে নাস্তিক ও অবিশ্বাসীদের প্রতি কোন বিষোদগার করা হয়নি এবং তাদের প্রতি আক্রমণাত্মক ভাষায় কিছু বলা হয়নি। বরং এখানে তাদের ভাই, বন্ধু, শিক্ষক ইত্যাদি রুপে দেখানো হয়েছে। কয়েকটা উদাহরণ দেয়া যেতে পারে যেমন – প্রফেসর মফিজুর রহমান, সাজিদের ডিপার্টমেন্টের সিনিয়র ভাই বিপ্লব দা, আরেক প্রিয় ব্যক্তি ব্লগার নীলাঞ্জন দা, বন্ধু রুপম ইত্যাদি । এই বইটির প্রাণ হলো এর সহজবোধ্য ভাষা এবং প্রাঞ্জলতা । বইটির তেমন কোন ত্রুটি সেভাবে পরিলক্ষিত হয় না যদিও তবু বইটি পড়তে বসে মনে হতে পারে গল্পগুলো আরো বড় হতে পারতো। কিন্তু এ কথাও মনে রাখতে হবে গল্প বড় হলে হয়তো গল্পগুলো প্রাঞ্জলতা হারাতো। এই প্রাঞ্জলতা গুণের কারনেই কিনা বইটি এক বসায় শেষ করা যায়।
সবশেষে বলা যায় বইটি কেন সবার পড়া উচিত। প্রথমত – ইসলাম সম্পর্কে কোন ভুল ধারণা থাকলে সেটা দুর করতে এবং ইসলাম সম্পর্কে আগ্রহ বাড়াতে এই বইটি পড়া উচিত।
দ্বিতীয়ত – যে যেই ধর্মেরই হোক না কেন। সৃষ্টিকর্তা যে একজন আছেন এবং তাকে অস্বীকার করা যে প্রকারন্তরে নিজেকেই অস্বীকার করা তা এই বইটি পড়লে বুঝতে পারবে।
তৃতীয়ত – অনেক নাস্তিক অভিযোগ করেন ধর্মে বিশ্বাসীরা যুক্তিতে না পেরে উগ্রতার পথ বেছে নেয়। কিন্তু এই বইটি পড়ে একজন বিশ্বাসী ব্যক্তি খুব সহজেই সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব এবং বিশেষ করে ইসলাম ধর্মের যৌক্তিক ব্যাখ্যা দিয়ে অবিশ্বাসীদের ভুল ভাঙাতে পারবে।
তাই দেরি না করে আজকেই পড়ে ফেলুন প্যারাডক্সিকাল সাজিদ। আশা করি কেউ হতাশ হবেন না।
To buy this book, click.
লিখেছেন,
মোহাম্মদ জারিফ অনন্ত
Best wishe
অসাধারণ ধারণা পেলাম বইটি না পড়েও। অসংখ্য ধন্যবাদ বেঙ্গল সোসাইটিকে।